Tuesday,28 August 2018
ctgbarta24.com
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পারুয়া ইউনিয়নের সৈয়দনগর এলাকা দিয়ে ইছামতীর তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। চলতি মৌসুমেই এই স্থানে ভাঙনে বিলীন হয়েছে প্রায় শতাধিক পরিবার। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে আরও ৫ শতাধিক ঘরবাড়ি, ১০টি মসজিদ, ৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আর মাত্র ১৫ ফুট ভাঙলে ভাঙলে বিলীন হবে উত্তর ও দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়ার যোগাযোগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পারুয়া ডিসি সড়ক ও এই সড়কের উপর নির্মিত লাঠিছড়া ব্রীজ।
রাক্ষুসে ইছামতীর ভয়াবহ ভাঙনের কবল থেকে বাঁচতে ব্লক স্থাপনের দাবীতে এলাকাবাসী মানববন্ধন করেছে।
শনিবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে পারুয়া ডিসি সড়কের সৈয়দনগর এলাকার নদীপাড়ে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে অংশ নিয়েছে এলাকার প্রায় কয়েক হাজার জনসাধারণ। ইছামতী নদী ভাঙন প্রতিরোধ কমিটির ব্যানারে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন পারুয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি ইততেখার হোসেন তালুকদার, ইউপি সদস্য মুহাম্মদ আমিনুর রহমান, মুহাম্মদ হারুনুর রশীদ, জান্নাতুল ফেরদৌস, কাজী মো. আনোয়ারুল ইসলাম, মাওলানা মুহাম্মদ নুরুন্নবী আলকাদেরী, শিক্ষক মিজানুর রহমান প্রমুখ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার পারুয়া ইউনিয়নের সৈয়দনগর এলাকা দিয়ে ইছামতী নদীতে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এই এলাকার লাঠিছড়া এলাকা থেকে পারুয়া রাবারড্যাম পর্যন্ত নদীর দেড় কিলোমিটার জুড়ে তীব্র ভাঙনে চলতি মৌসুমে ভাঙনে প্রায় শতাধিক ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনে নদী গর্ভে হারিয়ে গেছে। বর্তমানে ভাঙনে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে পারুয়া ডিসি সড়ক। এই এলাকা দিয়ে আর মাত্র ১৫ ফুট ভাঙলেই নদীতে তলিয়ে যাবে উত্তর ও দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়ার ৫ ইউনিয়নবাসীর যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ পারুয়া ডিসি সড়কটি। এছাড়াও এই এলাকা দিয়ে সড়কের উপর নির্মিত লাঠিছড়া ব্রীজটিও ভাঙনে বিলীন হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আমিনুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকা দিয়ে নদী ভাঙনে এলাকার মানুষ কষ্টে আছে। ভাঙন রোধে গত বছর স্থানীয় সাংসদ ড. হাছান মাহমুদের সুপারিশ সম্বলিত একটি আবেদন পানি উন্নয়ন বোর্ড ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরার করা হয়েছিল। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
ভাঙন ঝুঁকিতে থাকা কাদেরীয়া তৈয়্যবীয়া সুন্নীয়া দাখিল মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ মাওলানা মো. নুরুন্নবী আলকাদেরী বলেন, ‘ইছামতীর ভাঙন এই এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের সমস্যা। সামান্য বৃষ্টিতেই নদীর পানি ফুলে এই এলাকা প্লাবিত হয় এবং প্রায় সারা বছর ধরে নদীতে ভাঙন লেগেই থাকে। নদী থেকে প্রায় কয়েকশ ফুট দূরত্বে থাকলেও বর্তমানে একেবারে নদীর পাড়েই ভাঙনের কবলে পড়েছে এই এলাকার কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। এরমধ্যে সৈয়দনগর কাদেরীয়া তৈয়্যবীয়া সুন্নীয়া দাখিল মাদরাসা, এতিমখানা, হেফজখানা, কদেরীয়া তৈয়বীয়া একাডেমী, প্রায় ২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে তালুকদার বাড়ি সড়ক, ৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের কান্তর আলী সিকদার সড়কসহ এই এলাকার প্রায় ১০টি মসজিদ উল্লেখযোগ্য।
মাদ্সাটির পরিচালনা পরিষদ সভাপতি কাজী আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, নদী ভাঙনে আর মাত্র ১৫ ফুট ভাঙলেই পারুয়া ডিসি সড়ক ও লাঠিছড়া ব্রীজ ইছামতীতে তলিয়ে যাবে। এতে ৫ ইউনিয়নের মানুষ যোগাযোগে চরম দুর্ভোগে পড়বে। এছাড়াও এই এলাকা দিয়ে ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও এই একই দৈর্ঘ্যের ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান ভাঙলে অনিশ্চয়তায় পড়বে প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থী। তাই ভাঙন রোধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন।’
রাঙ্গুনিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, পারুয়া ডিসি সড়ক সহ এলাকা রক্ষায় আমরা ইতিমধ্যেই পানি উন্নয়ন বোর্ড সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা ইতিমধ্যেই এই ব্যাপারে প্রকল্প গ্রহণ করেছে। আশাকরি চলতি অর্থবছরেই ভাঙন রোধে ব্লক স্থাপন সহ প্রয়োজনীয় কার্যক্রম বাস্তবায়ন হবে।




