নিউজ ডেস্ক, সিটিজিবার্তা২৪ডটকম
বৃহস্পতিবার , ২৯ ডিসেম্বর ২০১৬
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) এবং জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার যৌক্তিকতা তুলে ধরে বলেন, এ পরীক্ষা ভবিষ্যতের জন্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের সৃষ্টি করছে। এই আত্মবিশ্বাস বোর্ডের উচ্চতর পরীক্ষাগুলোতে অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের কাজে লাগবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বৃহস্পতিবার সকালে গণভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ বছরের পিইসি, জেএসসি এবং সমমানের পরীক্ষার ফল গ্রহণকালে এসব কথা বলেন। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ জেএসসি এবং জেডিসি (জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট) পরীক্ষার ফল প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন। প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মো. মোস্তাফিজুর রহমান পিইসি এবং ইবতেদায়ি পরীক্ষার ফল প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন। এবারের পরীক্ষায় পাসের হার হচ্ছে ৯৩ দশমিক ০৬ শতাংশ। খবর বাসসের।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি জানি না তারা (অভিভাবকেরা) পরীক্ষার ফল দেখেন কি না। পড়ালেখার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস বাড়ছে এবং জনগণের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি হয়েছে। এটা খুব জরুরি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা আয়োজনের পেছনে আরেকটি কারণ ছিল, তা হচ্ছে ছাত্রছাত্রী, শিক্ষার্থীদের বোর্ড পরীক্ষার ভীতি দূর করা। এই পরীক্ষা দেওয়ার পর ছোট বাচ্চারা যখন একটি সার্টিফিকেট পাচ্ছে, তখন তার মনে হচ্ছে কিছু তো একটা করা হলো। এই সার্টিফিকেট শিক্ষার্থীর সারা জীবনের সঞ্চয় হয়ে থাকল এবং তার ভেতর একটি আত্মবিশ্বাসের সঞ্চার করবে। এর মাধ্যমে লেখাপড়ার প্রতি শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের একধরনের বাড়তি সচেতনতারও সৃষ্টি হয়েছে।
কয়েক দিন আগেই পিইসি এবং জেডিসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে কি না—এ বিষয়ে দেশে বিতর্ক হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা সময়ে লোকজন এ ধরনের পরীক্ষা আয়োজনের পক্ষে ছিল না। তবে আমার মনে হয়, জনগণকে এ ধরনের পরীক্ষা আয়োজনের কারণটা বোঝাতে হবে।…আমি বুঝি না কেন তারা এর প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পারছেন না।’
এর আগে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির জন্য দেশে বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতো এবং স্বল্পসংখ্যক মেধাবী শিক্ষার্থীই এসব পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পেত উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান নিয়মে সব ছেলেমেয়েই পরীক্ষা দেবে। সেখান থেকে যারা মেধাবী-দরিদ্র, তাদের যে নিয়মে বৃত্তি দেওয়া হয়, তাদের বৃত্তির জন্য বেছে নেওয়া হবে।
আওয়ামী লীগ সরকারে থাকলে দেশ পুরস্কার পায় আর বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এলে দেশ তিরস্কৃত হয় বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
সংসদীয় গণতন্ত্রে সরকার পরিবর্তন একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংসদীয় গণতন্ত্রে সরকার পরিবর্তন হবে, এটা একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু জনগণের কল্যাণের জন্য যেসব পদক্ষেপ আমরা হাতে নিচ্ছি, সেগুলোর ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে না কেন? সেটার সুফল জনগণ পাবে না কেন, প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী।
আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড এবং একটি মাদ্রাসা বোর্ডের চেয়ারম্যান তাদের নিজ-নিজ বোর্ডের জেএসসি ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষার ফলাফল হস্তান্তর করেন।
জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ২৩,৪৬,৯৫৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে এর মধ্যে পাস করেছে ২১,৮৩, ৯৭৫ জন শিক্ষার্থী। মোট পাসের হার হচ্ছে ৯৩ দশমিক ০৬ শতাংশ।
শিক্ষা সচিব সোহরাব হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন- শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মো. মুস্তাফিজুর রহমান।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিমসহ অন্যান্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।