এই মাত্র:

কর্ণফুলীতে চাঞ্চল্যকর বড় ইয়াবা মামলায় স্থানীয় প্রভাবশালীর অনেকে জড়িত

আদালতে মহসিনের জবানবন্দি

শুক্রবার, ২৫ জানুয়ারি ২০১৯

কর্ণফুলীতে চাঞ্চল্যকর বড় ইয়াবা মামলায় স্থানীয় প্রভাবশালীর অনেকে জড়িত

জে.জাহেদ, চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম কর্ণফুলী থানার সবচেয়ে আলোচিত বড় ইয়াবা মামলার পলাতক আসামি মো. মহসিনের স্বীকারোক্তিতে চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। মামলা হওয়ার প্রায় চার মাস পর তলের বিড়াল বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে।

আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে সে কর্ণফুলী থানার ১লাখ ১৫হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার মামলার আদ্যোপান্ত বর্ণনা করেছে। এতে বেরিয়ে আসছে স্থানীয় অনেক যুবলীগ নেতা ও প্রভাবশালীর নাম। ইতিমধ্যে যারা পুলিশের ভয়ে গা ডাকা দিয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।

গত ১৬ জানুয়ারী গভীর রাতে কক্সবাজারের খরুলিয়া নামক এলাকায় অভিযান চালিয়ে বাসা থেকে এ মামলায় জড়িত মো. মহসিনকে গ্রেফতার করে পুলিশ আদালতে পাঠান।

কর্ণফুলী থানায় ২৩শে সেপ্টেম্বও দায়ের করা ৬২নং মামলায় আদালতে জবানবন্দিতে মহসিন জানায়, কর্ণফুলী উপজেলার স্থানীয় এক প্রভাবশালী যুবলীগ নেতা যার নামের প্রথম অক্ষর ‘ই আদ্যোক্ষরে’র তার কাছ থেকে সে একখানা জমি কিনে। এ জমির বাবদে কিছু টাকা পাওনা থাকে সে লোক। ‘ই আদ্যোক্ষরে’র লোকটি ওই টাকার জন্য বার বার চাপ দিতে থাকে। এতে মহসিন অনেকটা বেকাদায় পড়ে। এক পর্যায়ে সে মহসিনকে বলে, আমার একটা ইয়াবার বড় চালান আসবে। চালানটি তুমি বোট থেকে নামিয়ে তোমার হেফাজতে রাখবে। এরপর এসব ইয়াবা চালান হতে কিছু ইয়াবা মহসিন ফারুককে দেয়। আর কিছু শিকলবাহা কবরস্থানে রাখেন। ফিশারীঘাটে র‌্যাব মহসিনকে খুঁজতে যায়। সে র‌্যাব দেখে পালিয়ে যায়। এরপর ফারুক ইয়াবা সহ কবরস্থান অর্থ্যাৎ ঘটনাস্থল হতে কর্ণফুলী থানা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন।

স্বীকারোক্তিতে মহসিন ঘটনার সাথে জড়িত আরো বেশ ক’জন প্রভাবশালীর নাম উল্লেখ করেছে বলে সুত্রে জানা যায়। পুলিশ ইতিমধ্যে তাদের গতিবিধির উপর নজর রাখা শুরু করেছেন বলেও নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাই সঙ্গগত কারণে পুরাপুরি তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি।

অপরদিকে চাঞ্চল্যকর রেকর্ড পরিমাণ এই ইয়াবা মামলায় গ্রেফতার মহসিনের তথ্যের ভিত্তিতে গত শুক্রবার সকালে উপজেলার শিকলবাহা দ্বীপকালারমোড়ল এলাকার ইমাম হোসেনের পুত্র আবুল কালাম (৫০) কে গ্রেফতার করে কর্ণফুলী থানা পুলিশ। এবং ২২ জানুয়ারী তার বিরুদ্ধে পুুলিশের পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদনে প্রেক্ষিতে আদালত দুদিনের রিমান্ডে মঞ্জুর করেন বলে জানা যায়।

মামলা সুত্রে আরো জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর (রাত ৯টায়) কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা দ্বীপকালারমোড়ল এলাকার বাইট্টাগোষ্ঠির কবরস্থানে অভিযান চালিয়ে ১ লক্ষ ১৫ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট-সহ ফারুক (৩০) নামের একজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে থানা পুলিশ।

সে সময় বৃহৎ এই ইয়াবা চালানের সাথে মো. মহসিন জড়িত বলে জানতে পারে পুলিশ।

এ ঘটনায় পরে কর্ণফুলী থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে উত্তর শিকলবাহা দ্বীপকালারমোড়ল এলাকার মো.ফারুক, মো.মহসিন, হেলাল, মো.সেলিম, মো.আব্দু সালাম, মো.ইউসুফ ও ওসমান এর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। যার মধ্যে অনেকে এখন জেলে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কর্ণফুলী থানার চৌকস পুলিশ অফিসার (ওসি তদন্ত) ইমাম হাসান বলেন, ‘মাদকের বিরুদ্ধে সরকার জিরো টলারেন্স ঘোষনা করেছে। সুতরাং আসামিদের জবানবন্দিতে যাদের নাম আসবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বিশেষ সুত্রে জানা যায়, আলোচিত এই ইয়াবা মামলায় কর্ণফুলী থানা পুলিশের তৎপরতায় যখন প্রকৃত আসামিরা একে একে গ্রেফতার হতে শুরু করে। ঠিক তখনই একটি প্রভাবশালী মহল ঘটনায় জড়িত প্রকৃত আসামিদের আড়াল করতে মোটা টাকার মিশনে মাঠে নেমেছে বলে সুত্রের দাবি।

আপনার মতামত দিন....

এ বিষয়ের অন্যান্য খবর:


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।


CAPTCHA Image
Reload Image

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.