এই মাত্র:

‘মাদকমুক্ত’ সমাজ গড়তে কাজ করছে র্র্যাব

রোববার, ২৭ মার্চ ২০১৬

'মাদকমুক্ত' সমাজ গড়তে কাজ করছে র্র্যাব

র‍্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন

সিটিজিবার্তা২৪.কম : অপরাধের মূলে রয়েছে মাদক। মাদকের বড় চালানের জন্য বিশাল অঙ্কের অর্থ পাচার হয় হুন্ডির মাধ্যমে (মানি লন্ডারি) যা বন্ধ করা গেলে বাংলাদেশে মাদকের প্রবেশ রোধ করা সম্ভব আর মাদকের ভয়াল থাবা থেকে সমাজকে বাঁচাতে কাজ করছেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তবে এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে এলিট ফোর্স র্র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্র্যাব)।

মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারে প্রতিদিনই পরিচালিত হচ্ছে র‌্যাবের বিভিন্ন অভিযান। মাদকদ্রব্য চোরাচালন বন্ধেও কাজ করে যাচ্ছেন র্র্যাব সদস্যরা।

২০০৪ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয় র্র্যাব।

বর্তমানে ইয়াবা ট্যাবলেটের নেশায় আশক্ত হয়ে পড়ছে দেশের তরুণ ও যুব সমাজ। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছেন। সন্ত্রাস ও জঙ্গি দমনের পাশাপাশি মাদক ও দেশ বিনাশী ইয়াবা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দৃঢ় প্রতিরোধ গড়ে তোলার পরিকল্পনাও গ্রহণ করেছে র্র্যাব।

সারাদেশেই মাদকবিরোধী বিভিন্ন অভিযান পরিচালনা করে আসছে র্র্যাব। এতে মাদক ব্যবসায়ীসহ মাদক বহনকারীদের আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে শুরু করে গত ২০ মার্চ পর্যন্ত সারাদেশে মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সংক্রান্ত মোট ৫৯ হাজার ২৫৬ জনকে গ্রেফতারও করেছে র্র্যাব।

গোপন অভিযানের পাশাপাশি মাদকবিরোধী ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছে। প্রতিষ্ঠা থেকে ২০ মার্চ পর্যন্ত ৪ হাজার ২১৪টি মাদক বিরোধী মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে র্র্যাব। এতে ৪ হাজার ৭০২ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। মামলা দেওয়া হয় এক হাজার ৩১২ জন আসামির বিরুদ্ধে।

এ পর্যন্ত র্র্যাব প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ ৫৫ হাজার ২৫০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ২৮ লাখ ৪১ হাজার ৬৯৩ বোতল ফেন্সিডিল, ১ লাখ ৪০ হাজার ৩১৫ বোতল বিদেশি মদ, ২৭ লাখ ৩০ হাজার ৬৯৩ লিটার দেশি মদ, ৪৬৯ কেজি হেরোইন, ২৭ কেজি কোকেন, ৬৬ হাজার ৩১৪ কেজি গাজা, ৩ লাখ ৪৯ হাজার ৫১১ ক্যান বিয়ার, প্রায় সাড়ে ২৩ কেজি আফিম, ৭৬ লাখ ৫৮ হাজার ৯৪৪টি ভায়াগ্রা ট্যাবলেট, ২ লাখ ৮০ হাজার ৬০৯টি সেনেগ্রা ট্যাবলেট, ৫ হাজার ৯২টি আইসপিল ট্যাবলেট এবং ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৫৯৪টি নেশা জাতীয় ইনজেকশনসহ বিপুল পরিমাণে অন্যান্য মাদকদ্রব্য উদ্ধার করেছে র‌্যাব।

চলতি বছরের (২০১৬) জানুয়ারি থেকে ২০ মার্চ পর্যন্ত মাদক সংক্রান্ত ঘটনায় ১ হাজার ৮৪ জনকে গ্রেফতার করে র্র্যাব। এ তিন মাসে প্রায় ৫৩ লাখ ৪৪ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করেছে র্র্যাব। এছাড়াও ১১ কেজি হেরোইন, ২২ হাজার ৯৮৮ বোতল ফেন্সিডিল, ১ হাজার ২০ কেজি গাঁজা, ৪ হাজার ২৬৯ বোতল বিদেশি মদ, ৩৬ হাজার ৮৫৪ লিটার দেশি মদসহ বিভিন্ন নেশা জাতীয় দ্রব্য উদ্ধার করে র্র্যাব।

গত জানুয়ারি মাসে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় ইয়াবার চালান আটক করেছে র্র্যাব। তিন দিনব্যাপী র্র্যাব-৭ ও র্র্যাবের গোয়েন্দা শাখার যৌথ দল অভিযান চালিয়ে চট্টগ্রাম থেকে ২৭ লাখ ৫০ হাজার ও রাজধানীর বিমানবন্দর থেকে ৫০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করে। এ সময় চোরাচালানচক্রের মূল হোতা আলী আহম্মদ (৫২), হামিদ উল্লাহ (৩২) ও মহিউদ্দিনকে (৩৫) গ্রেফতার করে র্র্যাব।

গ্রেফতারকৃতরা বার্মিজ নাগরিক বমংকয়ের কাছ থেকে ইয়াবা সংগ্রহ করে আয়াতুল্লাহ নামের অপর বার্মিজ নাগরিকের সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাংলাদেশে সমুদ্রপথে ইয়াবা নিয়ে আসতো। আর এই ইয়াবা চট্টগ্রামে নিয়ে এসে সেখান থেকে পুরো দেশের সরবরাহ করা হতো বলে জানায় র্র্যাব।

এর আগে, র্র্যাব প্রতিষ্ঠার দুই বছর পর অর্থাৎ ২০০৬ সালের ১৭ অক্টোবর রাজধানীর গুলশানে অভিযান চালিয়ে ইয়াবা সম্রাট আমিন হুদাসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করে র্র্যাব। ওই সময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ট্যাবলেটও উদ্ধার করা হয়। এরপর সারাদেশে তরুণ সমাজ যে ইয়াবায় আসক্ত সে বিষয়টি ধরা পড়ে।

দেশে জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের অপতৎপরতা প্রতিরোধের মাধ্যমে একটি স্থিতিশীল সমাজ প্রতিষ্ঠায় তৎপর রয়েছেন র্র্যাব সদস্যরা। মাদকদ্রব্য উদ্ধার ও মাদক ব্যবসায়ী এবং এ ব্যবসার মূল উৎসের যোগানদাতা হুন্ডি ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারে সারাদেশেই র্র্যাব সদস্যরা নানা অভিযান পরিচালনা করছেন।

র্র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের উপ-পরিচালক মেজর রুম্মান মাহমুদ বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই র্র্যাবে দেশের সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যেই কাজ করছে।

তিনি বলেন, সমাজে মাদকের ভয়াল থাবার বিস্তার রোধে মাদকবিরোধী অভিযান ও কার্যক্রমে অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি র্র্যাবও সফলতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। মাদক চোরাকারবারি, চোরাচালানের রুট, মাদকস্পট, মাদকদ্রব্য মজুদকারী ও বাজারজাতকারী ও এ ব্যবসা পরিচালনার মূল হোতা অর্থপাচার মানিলন্ডারিংয়ের সহায়তাকারীদের  চিহ্নিত করে তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে র্র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বদ্ধপরিকর।

এ লক্ষ্যে র্র্যাব প্রতিদিনই উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অভিযান পরিচালনা করে থাকে বলেও জানান তিনি।

আপনার মতামত দিন....

এ বিষয়ের অন্যান্য খবর:


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।


CAPTCHA Image
Reload Image