খেলা ডেস্ক, সিটিজিবার্তা২৪ডটকম
বৃহস্পতিবার , ১৪ ডিসেম্বর ২০১৭
মা হারানোর শোক এখনো কাটিয়ে ওঠা হয়নি আরদুজ্জামানের। ক্যানসারে আক্রান্ত মা রাবেয়া বেগমকে দেশের অন্যতম সেরা রেইডার চিরবিদায় জানিয়েছেন ৬ ডিসেম্বর। এর তিন দিন পরই ফিরেছেন কাবাডির ক্যাম্পে।
আগামী বছরের সেপ্টেম্বরে ইন্দোনেশিয়ায় অনুষ্ঠেয় এশিয়াডের জন্য গত সপ্তাহে ৩০ সদস্যের প্রাথমিক দল ঘোষণা করেছে ফেডারেশন। জাতীয় দল থেকে বাদ পড়া আরদুজ্জামান ফিরেছেন ক্যাম্পে। পল্টন কাবাডি স্টেডিয়ামে কাল শুরু হওয়া অনুশীলনে গভীর মনোযোগী ছাত্র আরদুজ্জামান। মা হারানোর শোক খানিক সময়ের জন্য হলেও ভুলতে চাইলেন কাবাডির ম্যাটে।
১৮তম এশিয়াডে পদক ফিরে পেতে এবার জোরেশোরে প্রস্তুতি শুরু করেছে ফেডারেশন। গত ১২ বছরে এশিয়াডে যে কোনো পদক নেই পুরুষ কাবাডিতে! ১৯৯০ সাল থেকে এশিয়াডে অংশ নিচ্ছে পুরুষ কাবাডি দল। সেবার বেইজিংয়ে পাকিস্তানকে হারিয়ে জেতে রুপা। পরের ১৯৯৪ হিরোশিমা গেমসেও রুপা। ১৯৯৮ ব্যাংককে ব্রোঞ্জ। ২০০২ বুসানে রুপা। ২০০৬ কাতার এশিয়াডে ব্রোঞ্জ। এরপর শুধু ব্যর্থতার গল্প।
তবে পুরোনো ব্যর্থতা ভুলে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন খেলোয়াড়েরা। প্রাথমিক দল গড়া হয়েছে অভিজ্ঞতা ও তারুণ্যের মিশেলে। জাতীয় দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সে হতাশ ফেডারেশন। সর্বশেষ গত সেপ্টেম্বরে কাঠমান্ডুতে প্রীতি টুর্নামেন্টে নেপালের কাছে হারে বাংলাদেশ। ১৯৯০ সালের পর প্রথমবারের মতো দুর্বল নেপালের কাছে হারায় নড়েচড়ে বসে ফেডারেশন।
টুর্নামেন্টের ১০ মাস আগেই তাই ক্যাম্প শুরু। ৩০ সদস্যের দল থেকে চূড়ান্ত ১২ জনকে বেছে নেওয়া হবে ইন্দোনেশিয়ায় যাওয়ার আগে।
ইন্দোনেশিয়ায় পদক জিতে অবসরে যেতে চান আরদুজ্জামান, ‘গত এশিয়াডে খুব কাছ থেকে দলের বিপর্যয় দেখেছি। সেবার ইনচন থেকে খালি হাতে ফিরেছিলাম। কিন্তু এবার আর সেটা হতে দেব না। অন্তত ব্রোঞ্জ জিতে যেন খেলাটা ছেড়ে দিতে পারি।’
মায়ের জন্যই পদকটা জিততে চান নৌবাহিনীর রেইডার, ‘আমার মা ভীষণ খেলাপাগল ছিলেন। দল থেকে যখন বাদ পড়ি, তখন খবরটা শুনে খুব কষ্ট পেয়েছিলেন মা। তবে আবারও ডাক পাওয়ায় খুব খুশি হয়েছিলেন। কিন্তু জাতীয় দলের ক্যাম্পে ফেরাটা দেখে যেতে পারলেন না। মায়ের জন্য হলেও যেন এবার ব্রোঞ্জ জিততে পারি।’
আরদুজ্জামানের স্বপ্ন সত্যি হওয়া মানেই তো কাবাডিতে এক যুগের পদক-খরার অবসান!










